প্রিন্ট এর তারিখ : ০১ ডিসেম্বর ২০২৫ ||
প্রকাশের তারিখ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডা
||
স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক নিবার্তা:
জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকেও মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছে।রবিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়; দুই ঘণ্টায় রায় পাঠদুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ছয় অধ্যায়ে সাজানো ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের প্রথম অংশ পাঠ শুরু করেন বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। দুই ঘণ্টা ১০ মিনিট রায় পাঠ শেষে বিকেল ২টা ৫০ মিনিটে শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করা হয়।এটি গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম রায়।ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের পর প্রথম মামলা২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়ের হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। একই বছরের ১৭ অক্টোবর মামলার প্রথম শুনানি অনুষ্ঠিত হয় এবং সেদিনই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।পরবর্তী সময়ে ১৬ মার্চ মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে নতুন আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন মঞ্জুর করে ট্রাইব্যুনাল।তদন্ত, অভিযোগ ও বিচারপ্রক্রিয়াএ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ে ১২ মে। এরপর ১ জুন শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পাঁচটি অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন হয়। এতে বলা হয়—
১৪ জুলাই গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান
হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের প্রাণনাশের নির্দেশ
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা
রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা
আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা
এই পাঁচ অভিযোগেই শেখ হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।একজন গ্রেপ্তার, দুজন পলাতকশেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বর্তমানে পলাতক। এ মামলায় একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
অভিযোগ গঠনের দিন তিনি ট্রাইব্যুনালে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হতে আবেদন করেন।যথাক্রমে ১২ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শুরু হয়ে ২৩ অক্টোবর শেষ হয়। প্রসিকিউশন দুজন পলাতক আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করে। অপরদিকে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের খালাস আবেদন করেন।রায়ের পরবর্তী পদক্ষেপট্রাইব্যুনালের রায়ে পলাতক দুই আসামির বিরুদ্ধে দ্রুত আন্তর্জাতিক নোটিস জারি এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক ঃ
সেজান মাহমুদ সোহেল
কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক নিবার্তা । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত